From 2011-15

দ্য লেডী

কিছু মানুষ প্রচলিত পথে হাঁটতে গিয়ে হঠাৎ কেন থমকে দাঁড়ান? বিধি-নিষেধ উপেক্ষা করে কী এক শক্তির বলে বলীয়ান হয়ে মোহাবিষ্টের মতো একাগ্রচিত্তে খুঁজতে থাকেন মহত্তর কিছু; কেন এমন হন মানুষগুলো? তার উত্তর আজও মেলে নি মনোবিজ্ঞানের কাছে। জীনতত্ত্বেও এখনো রহস্যজনকই এটি। শুধু মায়ানমার কেন, সারা বিশ্বের গণতন্ত্রে এমনই এক ব্যক্তি- অং সান সুচি। রক্তে মানুষের জন্য কিছু করারা তাগিদ সবসময় থাকলেও রাজনীতির মাধ্যমেই তা করতে হবে, তেমন মনোভাব তার ছিল না। তিনি বিশ্বাস করতেন গণতন্ত্রে, বলতেন- নিজেদের জন্য ভালোটা নির্ধারণের অধিকার রয়েছে জনগণের।

রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হাতে পিতা জেনারেল অং সান ও চাচা নিহত হওয়ার পর মায়ের সঙ্গে সুচি চলে আসেন নয়াদিল্লীতে। সেখানে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা শেষ করে যান অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। রাজনীতিতে আসার ইচ্ছা তার ছিল না তখনো। অক্সফোর্ডে পড়ছিলেন দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতি বিষয়ে। পড়তে গিয়ে পরিচয় মাইকেল অ্যারিসের সঙ্গে। অ্যারিস অক্সফোর্ডে পড়াতেন প্রাচ্যের ইতিহাস; তার পান্ডিত্য ছিল নেপাল, ভুটান ও বার্মা সম্বন্ধে। ফলে দু’জনের ঘনিষ্টতা জন্মাতে সময় লাগে নি। তারা বিয়ে করেন ১৯৭২ সালে। জীবনীকারদের ভাষ্য অনুযায়ী, এসময় বেশ সুখী জীবন কাটাচ্ছিলেন সুচি। শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নেয়ার ইচ্ছা ছিল। ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন থেকে ডক্টরেটও সম্পন্ন করেন সে কারণে। এরই মধ্যে সুচির জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন আসে ১৯৮৮ সালে- দীর্ঘদিন পর অসুস্থ মাকে দেখতে ইয়াঙ্গুনে গেলে। ততদিনে রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি) গঠিত হয়েছে মায়ানমারে। দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী ছিলেন তার মা। নেত্রী হিসেবে তেমন যোগ্যতাসম্পন্ন ছিলেন না তিনি; কর্মীরাও ছিলেন হতোদ্যম। তারা উদ্যোম ফিরে পেলেন সুচি ইয়াঙ্গুনে আসার পর। বাবা জেনারেল অং সানের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে পাশ্চাত্য সভ্যতার অপূর্ব সম্মিলন ঘটেছিল তার মধ্যে। তখনও তিনি নিশ্চিত ছিলেন না, রাজনীতিই করবেন কিনা। এ মানসিক সংকট থেকে তাকে উদ্ধার করে তদকালীন সামরিক জান্তা- এনএলডির এক শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সেনা আগ্রাসন চালিয়ে ২ হাজার মানুষকে হত্যার মধ্যে দিয়ে। ঘটনাটির প্রতিবাদে ও গণতন্ত্র কায়েমের লক্ষ্যে রুখে দাঁড়ান সুচি। তার জনপ্রিয়তা বাড়ছিল তখন। এ সময় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে গৃহবন্দী করা হয় তাকে।

তারপর লন্ডনের বাড়িতে আর যাওয়া হয় নি সুচির। স্বামী-সন্তানের সঙ্গে দু-একবার দেখা হয়েছে মাত্র। জান্তা হয়তো চেয়েছিল জনবিচ্ছিন্ন হলে এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়বেন তিনি। এরই মধ্যে অ্যারিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়ও যেতে দেয়া হয় নি তাকে। সৌভাগ্যবশত এসব শোক সহ্য করেও গণতন্ত্রের পথে অবিচল ছিলেন তিনি।

সুচির বয়স এখন ৬৬’র কাছাকাছি। গত প্রায় ৩০ বছর ধরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন গান্ধীর অনুসারী, মায়ানমারের অবিসংবাদিত এ নেত্রী। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত তার অহিংসাবাদের সামনে হার মানতে চলেছে দেশটির জান্তা। এ ক্ষেত্রে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সহায়তা ও নিজেদের শুভবুদ্ধিরো অবদান রয়েছে খানিকটা। সম্প্রতি এসব কারণে ২০ বছরেরও বেশি সময় পর গৃহবন্দীত্ব থেকে মুক্তি দেয়া হয় সুচিকে। নতুন করে নিবন্ধনের সুযোগ দেয়া হয় তার দল এনএলডিকে। তার ধারাবাহিকতায়ই কয়েকদিন আগে ৪৫টি আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিলো তার দল। সরকারি ঘোষণা না এলেও, বেসরকারি ফলাফলে অধিকাংশ আসনে জিতেছে তার দল। অনেকের শঙ্কা, কারচুপি করে নির্বাচনের ফল না আবার পাল্টে দেয় সরকার। তেমন কিছু ঘটবে বলে মনে হয় না। বরং এটা বলা যায়- ঘোরতর শত্রু জুলিয়াস সীজারের বিষয়ে দেরীতে হলেও সিসেরোর যে উপলব্ধি এসেছিল সেটিই এখন অনুভব করছে মায়নমারের জান্তা। সিসেরোর মতোই তারা সম্ভবত বুঝতে পেরেছে, সময় কিছু মানুষের ওপর নিজে থেকে দেশ-কালকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব চাপিয়ে দেয়; সুচি তেমনই একজন।

নিয়াজ মাখদুম

আরও সহজতর এখন হৃদরোগ নিরাময়

কিডনি ও ফুসফুস মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এগুলোর কার্যপ্রণালী একাধারে জটিল ও সূক্ষ্ম। অঙ্গগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক। আবার দেহের সবচেয়ে জটিল অঙ্গও এটি। কারণ মস্তিষককে নিজেই নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। একটি সুবিধা হলো, কিডনি ও ফুসফুসে মতো অংশে সমস্যা দেখা দিলে স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে মস্তিষ্ক প্রাথমিক নিরাময়ের জন্য ব্যবস্থা নিয়ে থাকে; ঔষধের অপেক্ষায় না থেকে পেশির সংকোচন-প্রসারণ ঘটিয়ে, এনজাইম ও হরমোন নিঃসরণ করে সমাধানের উদ্যোগ নেয়া হয় প্রাথমিকভাবে। এদিকে দেহের ‘জ্বালানি’ তথা সরবরাহকারি অঙ্গ হৃদযন্ত্রের কার্যপ্রণালী কিডনির মতো জটিল না হলেও এটি নিয়ন্ত্রণে মস্তিষ্ককে বিশেষ ঝামেলা পোহাতে হয়। তার কারণ হৃদপেশির ওপর মস্তিষ্কের নিয়ন্ত্রণ নেই। এতে করে হৃদপিন্ড কোনো কারণে তার নির্ধারিত কার্যক্রম সম্পাদনে অসমর্থ হলে পুরোপুরি নির্ভর করতে হয় বাইরের সাহায্য বা চিকিৎসার। এতে সমস্যা দেখা দিলে মস্তিষ্ক সাধারণত সূক্ষ্ম ব্যথার মাধ্যমে তা জানিয়ে দেয় পুরো স্নায়ুতন্ত্রকে। অবশ্য অনেক সময় এতটা তাৎক্ষণিকভাবে ঘটে যে ব্যথা বা অন্য কোনোভাবে সংকেত দেয়ার উপায় থাকে না। এ কারণে হৃদযন্ত্রের যেকোনো সমস্যাই মারাত্মক ও অল্প সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেয়া না হলে এ ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুও ঘটে থাকে।

হৃদরোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিসংখ্যান দেখলে আঁতকে উঠবেন যে কেউ। যুক্তরাষ্ট্রে প্রতিবছর যত মানুষ ক্যান্সারে মারা যান তারচেয়ে বেশি মারা যান হৃদযন্ত্রের জটিলতায়। এ রোগে মৃত্যুর হার বছরপ্রতি আনুমানিক দুই কোটি। বহু হৃদরোগী রয়েছে আমাদের দেশেও। তাদের অনেকে জানেন, তবে বিপুল সংখ্যকই জানেন না যে, তারা রয়েছে হৃদরোগের ঝুঁকিতে। রোগটি নিয়ে এ দেশে একটি কথা প্রচলিত রয়েছে। তাহলো, হৃদরোগ বড়লোকের রোগ; এটি গরিবের হওয়ার তেমন সম্ভাবনা নেই। কথাটির সত্যতা নিয়ে বিতর্ক চলতে পারে। তাতে যোগ না দিয়ে, এ সংক্রান্ত কিছু কৌতূহলোদ্দীপক পরিসংখ্যান তুলে ধরা যেতে পারে এখানে। জানা যায়, ধনীদের চেয়ে মধ্যবিত্তরা বেশি আক্রান্ত হন হৃদরোগে। তাদের চেয়ে কম হলেও এ ক্ষেত্রে নিম্নবিত্ত হৃদরোগীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য বটে। তবে হৃদরোগে মানুষের মৃত্যুর হার বিচারে, এ ক্ষেত্রে নিম্নআয়ের মানুষের ঝুঁকি উচ্চ আয়ের মানুষের চেয়ে দশগুণ বেশি।

বাংলাদেশে প্রতি বছর অনেক মানুষ বিভিন্ন হৃদরোগে মারা যান সময়মতো ও পর্যাপ্ত চিকিৎসার অভাবে। সাধারণভাবে দেশের চিকিৎসাসেবার মান ও পরিমাণের প্রসঙ্গ উত্থাপন না করাই ভালো। সবাই সে সম্বন্ধে যথেষ্ট অবগত। দুঃখজনক হলো, কয়েকটি উন্নত বেসরকারি হাসপাতাল থাকলেও সাধারণ মানুষ চিকিৎসা নিতে পারেন এমন পর্যাপ্ত ও মানসম্পন্ন হৃদরোগ চিকিৎসাকেন্দ্র গড়ে ওঠে নি দেশে। এদিকে তেমন জটিল না হলেও হৃদযন্ত্রের অপারেশন সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। এতে করে এ ধরনের রোগের নিরাময় ব্যয়বহুল; তারপর অনেক সময়ই চিকিৎসার পরও থেকে যায় সমস্যা। এ ক্ষেত্রে একটি সুখবর পাওয়া গেলো চলতি সপ্তাহে। সেটি হলো, এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকজন বিজ্ঞানী টিকা আবিষ্কার করেছেন যেটি শরীরে নেয়া হলে বিশেষত হার্ট অ্যাটাকের নিরাময় সম্ভব; এতে থাকা বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান হৃদযন্ত্রে জমে থাকা চর্বির স্তর সরাতে পারবে অল্প সময়ে ও সহজে। এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে পরিষ্কারভাবে জানা না গেলেও, বলা হচ্ছে, এটি হৃদরোগের প্রায় ব্যথামুক্ত চিকিৎসা। সংশ্লিষ্ট গবেষকরা বলছেন, অনুমতি ও স্বত্ত্ব পাওয়া গেলে টিকাটির বাজারজাতকরণ শুরু হবে আগামী কয়েক বছরের মধ্যে। এটি সবার জন্যই নিঃসন্দেহে বড় আনন্দের খবর।

দাম যেমনই হোক আর সময় যতই লাগুক, এ দেশের রোগীরাও টিকাটি থেকে উপকৃত হবেন বলেই মনে হয়। বাণিজ্যও হতে পারে যদি যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি ওই প্রতিষেধকটির স্বত্ত্ব কিনতে পারে বাংলাদেশী কোনো ঔষধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। একই বিন্যাসে (তবে ভিন্ন ধারায়) গবেষণা চালিয়ে স্থানীয় বিজ্ঞানীরা হৃদরোগের প্রতিষেধক তৈরি করতে পারলে আরও ভালো। সে ক্ষেত্রে স্বত্ত্ববাবদ প্রতিষ্ঠানের অর্থ সাশ্রয় হবে ও কমবে হৃদরোগে চিকিৎসা ব্যয়। তার সঙ্গে ব্যাপকভাবে এ ধরনের ঔষধ রফতানির সুযোগ তো থাকলই।

ফাহমিদা ফেরদৌস

ভূমিকম্পে আতংক নয়

ইন্দোনেশিয়ার আচেহ প্রদেশ থেকে উৎপত্তি লাভ করা কয়েক দফা ভূমিকম্পে গতকাল কেঁপে উঠেছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল। কয়েক হাজার মাইল দূরবর্তী বিভিন্ন শহর থেকেও বোঝা গেছে এর শক্তিমত্তা। ভৌগলিকভাবেই আমাদের দেশ রয়েছে ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে। অতীতে রিখটার স্কেল বা এ ধরনের কোন ভূমিকম্প পরিমাপক যন্ত্র ছিল না বলে সেগুলোর সবক’টির ব্যাপারে বিস্তারিত জানা যায় না। সাম্প্রতিককালে এ বিষয়ে মানুষের সচেতনতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে আতংকও।

গতাকাল দুপুরে ঘটা ওই ভূমিকম্পটি ছিল মোটামুটি মাঝারি মানের। এতে অনেকে টেরও পান নি। আবার যারা টের পেয়েছেন তারা আতংকে বেরিয়ে আসেন রাস্তায়। দেশের কয়েকটি স্থানে এ সময় জলাশয়ের পানিও ফুঁসে ওঠে বলে জানা যায়। তবে এর আঘাতে উৎপত্তিস্থল ইন্দোনেশিয়ার মানুষজন হয়ে পড়েন বেশ উৎকন্ঠিত। তাদের দুশ্চিন্তা যত না বেশি ভূমিকম্প নিয়ে তার চেয়েও বেশি ছিল সুনামি নিয়ে। ২০০৪ সালের প্রলয়ংকরী সুনামির অভিজ্ঞতা তাদের মন থেকে মুছে যায় নি এখনো। এ ক্ষেত্রে খানিকটা হলেও সুনামির ঝুঁকি রয়েছে বাংলাদেশেও। তার কারণ বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরের তীরবর্তী। এ উপসাগরটির সঙ্গে আবার যোগ রয়েছে ভারত মহাসাগরের। বিশ্বে ঘটা বড় বড় ভূমিকম্প তথা সুনামির অন্যতম উৎপত্তি স্থল এটি। তার প্রধান কারণ, এ মহাসাগরটি যেসব টেকটোনিক প্লেটের ওপর অবস্থিত তার প্রায় সবগুলোই সতত সঞ্চারমাণ। এতে করে তাদের পারস্পরিক ঘর্ষণে সুনামি ঘটার ঝুঁকিও বেশি। এ ক্ষেত্রে কিছু বিশেষগের আবার দ্বিমত রয়েছে। তারা মনে করেন ইন্দোনেশিয়া বা থাইল্যান্ডে সুনামি ঘটার সম্ভাবনা যেমন রয়েছে কক্সবাজার, চট্টগ্রামের ক্ষেত্রে তেমনটি নেই।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, ছোট-মাঝারি ভূমিকম্পের পরই বড়টি সংঘটনের ঝুঁকি থেকে যায়। এর বিপরীত মতও রয়েছে। সেটি যারা বিশ্বাস করেন, সেসব বিশেষজ্ঞ বলেন, ছোট-মাঝারি ভূমিকম্প বড়টির ঝুঁকিই কমিয়ে দেয় বরং। তবে বোধকরি যে মাত্রাতেই ঘটুক না কেন ভূমিকম্প আতংকিত করে তোলে মানুষকে। তার প্রধান কারণ, প্রাকৃতিক এ দুর্যোগটির কাছে মানুষ একান্তই অসহায়। তাছাড়া ভূমিকম্পের প্রলয়ংকরী রূপ সম্বন্ধেও সবাই কম-বেশি জানেন। গত বছর জাপানের ভূমিকম্প ও তার পর সুনামিতে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি তাদের অনেকে দেখেছেনও। সুনামির ক্ষেত্রে সুবিধা হলো, এ ব্যাপারে আগাম তথ্য জানা যায়। ভূমিকম্পের নিশ্চিত পূর্বাভাষ দেয়ার মতো কোনো যন্ত্র এখনো আবিষ্কারই হয় নি। আমাদের দেশে ভূমিকম্প নিয়ে বড় দুশ্চিন্তা হল, এখানে কোন দালান যে ভূমিকম্প সহনীয় করে নির্মাণ করা হয়েছ আর কোনটি হয় নি, তা নিশ্চিত হবার উপায় নেই। তাছাড়া মানুষের আতঙ্ক কাটাতে পদক্ষেপপ এ দেশে নেয়া হয় না যথাযথভাবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও প্রাথমিক প্রস্তুতিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হলে মানুষের আতংক দূর হতো অনেকাংশেই।

এদিকে বিজ্ঞানীরা কিন্তু তৎপর আছেন, প্রথমে ভূমিকম্পের সঠিক পূর্বাভাষ ও পরে তা প্রতিরোধের উপায় আবিষ্কারের। এরই মধ্যে অলৌকিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে ন্যূনতম প্রতিরোধের উপায় উদ্ভাবনের লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র গবেষণাগার প্রতিষ্ঠাও করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (ক্যালটেক)। ওতে কর্মরত বিজ্ঞানীদের এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য সাফল্য হলো, সূর্যের আয়ু ফুরিয়ে গেলেও পৃথিবীকে টিকিয়ে রাখার পদ্ধতি বের করা। তারা বলছেন, আগামী কয়েক বিলিয়ন বছর পর সূর্যের জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে পৃথিবীকে বর্তমান কক্ষপথ থেকে বের করে আনতে পারলেই বেঁচে যাবে মানবজাতি। এ ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে চাঁদের মতো উপগ্রহ বা গ্রহাণু ব্যবহার করা যেতে পারে। তাদের এমন যুক্তি তাত্ত্বিকভাবে মেনে নিয়েছেন অনেক বিজ্ঞানীই। যাহোক, ক্যালটেকের ওই বিজ্ঞানীরা আশাবাদী এ শতাব্দীতেই ভূমিকম্প ও প্রতিরোধের কার্যকর উপায় আবিষ্কারে। তবে সেটি কবে সম্ভব হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েই যাচ্ছে।

ফাহমিদা ফেরদৌস

Leave a comment